বিশেষ প্রতিবেদন: আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষের কাছাকাছি। কিন্তু দেশটিতে একটাও সাপের অস্তিত্ব নেই। সরীসৃপ বলতে দেখা পাবেন শুধু টিকটিকির। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক জানিয়েছে আয়ারল্যান্ডের এই অদ্ভুত পরিস্থিতির কথা। কিন্তু কেন জানেন?
উত্তর আটলান্তিক মহাসাগরে অবস্থিত আয়ারল্যান্ড একটি দ্বীপ, যা মান সাগর দ্বারা গ্রেট ব্রিটেন থেকে বিচ্ছিন্ন। সেখানে কোথাও সাপ নেই। নিউজিল্যান্ড, গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, কিংবা অ্যান্টার্কটিকাতেও সাপের দেখা মেলে না।
আয়ারল্যান্ডে সাপ না থাকার বিষয়টি খ্রিস্টধর্মের উপকথাতেও উঠে এসেছে। জনশ্রুতি অনুযায়ী, আনুমানিক ৫ খ্রিস্টাব্দে সেন্ট প্যাট্রিক খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আয়ারল্যান্ড পৌঁছন। টানা চল্লিশ দিন উপোসের মাধ্যমে তপস্যা করার জন্য একটি পাহাড়ে উঠেন তিনি। সেখানে কিছু সাপ তাঁকে ঘিরে ধরে। এরপরই তিনি আয়ারল্যান্ড থেকে সব সাপ বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেন।
তাই পুরো আয়ারল্যান্ডের যেখানে যত সাপ ছিল, সেগুলোকে একত্র করে একটি শৈলচূড়ার উপর থেকে সমুদ্রে ফেলে দেন। তারপর থেকে আয়ারল্যান্ডে আর কখনও সাপ দেখা যায়নি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই মিথের সাথে একমত নন। তাঁদের ভাষ্যমতে, আয়ারল্যান্ডে কখনোই কোনো সাপ ছিল না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ হাজার বছর আগে তুষারযুগে বরফে ঢাকা ছিল আয়ারল্যান্ড। সাপ ঠান্ডা রক্তের প্রাণী হলেও, রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজনীয় মাত্রা বজায় রাখতে চারপাশের বস্তু থেকে তাপ গ্রহণ করতে হয় তাদের। বরফের চাদরে মোড়া আয়ারল্যান্ডে সেটা সম্ভব ছিল না।তুষারযুগের পর হিমবাহ গলতে শুরু করলে, মানসাগর দ্বারা ব্রিটেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আয়ারল্যান্ড।সেই সময় ব্রিটেনকে বাসস্থান হিসাবে বেছে নেয় কয়েক প্রজাতির সাপ। তবে স্বভাবে কুঁড়ে হওয়ায় ব্রিটেন থেকে সাঁতরে আয়ারল্যান্ডে আসার সাহস দেখায়নি তারা।