দুর্গাপুজোয় তাণ্ডবের জবাবে বুলডোজার চালাল পড়শি-সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদন, ৮ অক্টোবর ২০২৫: সাম্প্রদায়িক অশান্তির আঁচ লেগেছে নেপালে। দুর্গাপুজোর বিসর্জন যাত্রার সময় জনকপুরে ঘটে যাওয়া পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় উত্তেজনা চরমে ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই…

Nepal Durga Puja clashes bulldozer action

নিজস্ব প্রতিবেদন, ৮ অক্টোবর ২০২৫: সাম্প্রদায়িক অশান্তির আঁচ লেগেছে নেপালে। দুর্গাপুজোর বিসর্জন যাত্রার সময় জনকপুরে ঘটে যাওয়া পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় উত্তেজনা চরমে ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে পুলিশকে অশ্রুগ্যাস নিক্ষেপ করতে হয়। এই ঘটনার পর পড়শি দেশের সরকার নড়েচড়ে বসে এবং অবৈধভাবে নির্মিত ইসলামী সংস্থান ভাঙতে নামানো হয় বুলডোজার।

Advertisements

কী ঘটেছিল জনকপুরে?

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জনকপুরের দেবপুরা রুপেথা এলাকায় রিজভি জামা মসজিদের কাছেই দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন চলছিল। সেই সময় ভক্তদের দিকে পাথর ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। এতে কয়েকজন ভক্ত আহত হন। মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষিপ্ত স্থানীয় কিছু যুবক পাল্টা প্রতিশোধ নিতে একটি মসজিদে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন।

বিজ্ঞাপন

সরকারের পদক্ষেপ

এই ঘটনার জেরে প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করে। নেপাল সরকার জানিয়ে দেয়, অবৈধভাবে তৈরি ধর্মীয় স্থাপনা আর টিকতে দেওয়া হবে না। সরকারি নির্দেশে বুলডোজার চালিয়ে সংস্থান ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল।

প্রতিক্রিয়া মিশ্র

এই পদক্ষেপকে ঘিরে মতভেদ তৈরি হয়েছে। একাংশ মনে করছেন, সরকারের কঠোর অবস্থান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং ভবিষ্যতে দাঙ্গা রোধে কার্যকর হবে। তবে অন্য অংশের বক্তব্য, বুলডোজার অভিযান সাম্প্রদায়িক সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তুলতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে কারও মতে, এটি নেপালের আইনের শৃঙ্খলা রক্ষার সঠিক পদক্ষেপ, আবার কারও মতে, এই ধরণের ‘বুলডোজার পলিসি’ বরং আগুনে ঘি ঢালতে পারে।

আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ

নেপালের সাম্প্রতিক এই ঘটনা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। কূটনৈতিক মহল বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য নেপালের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

দুর্গাপুজোর উজ্জ্বল উৎসবের মাঝেই সাম্প্রদায়িক সংঘাতের আঁচে দগ্ধ হলো নেপাল। সরকারের বুলডোজার অভিযান স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কতটা সফল হবে, তা সময় বলবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—এ ঘটনা নেপালের সমাজ-রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।