নারদা ঘুষকাণ্ডের টম অ্যান্ড জেরির মতো মমতা-শুভেন্দু মোলায়েম ঝগড়া বুঝছে রাজ্যবাসী: CPIM

তৃণমূলের ১২ জন নেতার বিরুদ্ধে নারদ (Narada case) নিউজ পোর্টালের সিইও ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে এসেছিল। যাতে স্পষ্ট তৃণমূলের ওই…

Narada case

তৃণমূলের ১২ জন নেতার বিরুদ্ধে নারদ (Narada case) নিউজ পোর্টালের সিইও ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে এসেছিল। যাতে স্পষ্ট তৃণমূলের ওই একডজন নেতা ও এক পুলিশ অফিসারকে গোপন লেনদেন ও সে বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে দেখা গেছে৷ সেই নেতাদের মধ্যে ছিলেন সুব্রত মুখ্যোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, সৌগত রায়, কাকলী ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় ও শঙ্কুদেব পন্ডা, আইপিএস এম এইচ মির্জা।

সেবার নারদা ইস্যুতে সরব হয়েছিল বিজেপি৷ তখন এ বিরোধী দল সিপিআইএম। তবে বিজেপির তরফে ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ সাংবাদিক বৈঠক করে দেখানো হয়েছিল সেই ভিডিও৷ এর পরের দিনেই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়৷ দাবি ছিল তদন্ত করুক সিবিআই৷ পরে রাজ্য সরকারের তরফে তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ম্যাথু স্যামুয়েলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়৷ ম্যাথু স্যামুয়েলকে সমন পাঠায় কলকাতা পুলিশ৷ ২০১৭ সালে ওই মামলার তদন্তভার বর্তায় সিবিআইয়ের ওপর৷

   

এরপর দীর্ঘ ৫ বছর ধরে মামলার তদন্ত করছে সিবিআই৷ কিন্তু তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে শাসক এবং বিরোধী উভয় শিবিরে৷ এরই মধ্যে দলবদল করে বিজেপিতে চলে গেছেন শুভেন্দু অধিকারী৷ শঙ্কুদেব পন্ডাও বিজেপিতে৷ বিজেপি ঘুরে তৃণমূলে মুকুল রায়। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও কেন তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে না? কেন শুধুমাত্র তৃণমূলের নেতাদের হেনস্থা করা হচ্ছে? প্রশ্ন তোলে ঘাসফুল শিবির৷

গত বছরেই এই একই ইস্যুতে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। জেল খাটতে হয়েছিল মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এরপর দেখা গেল ইডির চার্জশিটে নেই শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়দের নাম৷ শুধুমাত্র ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখ্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং এসএমএইচ মির্জাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে ইডি। সিবিআইয়ের চার্জশিটে শুভেন্দু অধিকারীর নাম থাকলেও কেন ইডির চার্জশিটে নয়, প্রশ্ন তুলতে শুরু করে তৃণমূল।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সদ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়েছে৷ দলের সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম বলেন ২ মাসের মধ্যে পার্থদা ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে গেলে ইডির তদন্ত হত না। তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন পার্থদা, তাই তাঁর বিরুদ্ধে কুত্‍সা, ষড়যন্ত্র হচ্ছেন।আমাকে জেলে যেতে হয়েছিল। কিন্তু, একই মামলায় একজন ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে যাওয়ায় কিছু হয়নি। অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হলে দল ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কোনও ষড়যন্ত্রের শিকার হলে আমরা প্রতিবাদ করব৷ এই একজন বলতে যে শুভেন্দু অধিকারীকেই বোঝানো হচ্ছে। এটার কোনও অবকাশ নেই৷

রাজনৈতিক মহলেও একই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন তৃণমূল নেতাদের হাত পেতে টাকা নিতে দেখা গেলেও নারদা মামলায় কেন গ্রেফতার করা হল না? কেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হল না?

এ বিষয়ে সরব হয়েছে সিপিআইএম। বামেদের দাবি, আজকের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নারদ মামলায় ভিডিওতে ধরা পড়েছিলেন। এখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গলা ফাটালেও সেই ঘুষ নেওয়ার দৃশ্য থেকে বাদ পড়বেন না।

সিপিআইএমের তরফে অভিযোগ উঠছে, এসবই তৃণমূল ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়ার খেলা। আসন্ন লোকসভা ভোটে গোপনে আসন বণ্টন চুক্তির বিষয়টি নিয়ে সরব হচ্ছে বামপক্ষ।