Monday, December 8, 2025
HomeBharatমুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে বিস্ফোরক সিধু পত্নী

মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে বিস্ফোরক সিধু পত্নী

- Advertisement -

চণ্ডীগড়: কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা নভজ্যোত সিং সিধুর স্ত্রী ডঃ নবজ্যোত কৌর সিধু সরাসরি (Sidhu Wife 500 Crore Allegation)অভিযোগ তুলেছেন যে কংগ্রেসে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় “৫০০ কোটি টাকার অ্যাটাচি” যার ইঙ্গিতেই কেঁপে উঠেছে দিল্লির রাজনীতিক অন্দরমহল। তাঁর দাবি, “যে নেতা ৫০০ কোটি টাকার অ্যাটাশে নিয়ে আসে, তার হাতেই যায় মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার।”

এই অভিযোগ শুধু কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয় নয়, বরং গণতান্ত্রিক কাঠামোর স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। ডঃ সিধুর বক্তব্য, পঞ্জাবে নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে আদর্শ, যোগ্যতা বা জনসমর্থন নয় বরং অর্থবলই হয়ে উঠছে বড় ফ্যাক্টর। তিনি বলেন, “আমার স্বামী একজন লড়াকু রাজনীতিবিদ। কিন্তু যখন নেতৃত্ব টাকার বিনিময়ে বেচাকেনা হয়, তখন সৎ মানুষদের জায়গা কোথায়?” তাঁর কথায় স্পষ্ট, এই অভিযোগ জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

   

ডঃ নবজ্যোত সিধুর অভিযোগ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং কর্নাটক তিন রাজ্যেই একাধিক কংগ্রেস নেতা এই ধরনের অর্থ–লেদেন, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি এবং টাকার বিনিময়ে পদ বণ্টনের অভিযোগ তুলেছিলেন। ছত্তিশগড়ে পরিবর্তনযজ্ঞের সময় মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে তীব্র টানাপড়েন হয়েছিল। তেলেঙ্গানায় নির্বাচনের আগে candidature বণ্টন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কয়েকজন প্রবীণ নেতা। কর্নাটকেও মন্ত্রীপদ ও সাংগঠনিক পদ কেনাবেচা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ্যে আসে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এই অভিযোগগুলি যদি সত্য হয়, তবে তা গণতন্ত্রের জন্য গুরুতর হুমকি। কারণ, নেতৃত্ব টাকার বিনিময়ে নির্ধারিত হলে জনগণের মতামত গুরুত্বহীন হয়ে যায়। ডঃ নবজ্যোত কৌর সিধু সরাসরি নাম না করলেও গাঁধী পরিবারকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন এই প্রক্রিয়া বহুদিন ধরে চলছে এবং উচ্চ নেতৃত্ব জানলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

“একটি পরিবার যখন পুরো পার্টিকে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন স্বচ্ছতা কোথায়? জনগণ কি এই সব জানার অধিকার রাখে না?” প্রশ্ন তাঁর। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযোগ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই চ্যালেঞ্জ করছে। যে সময়ে কংগ্রেস নতুন করে নিজেদের পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছে, সেই সময়েই এমন বিস্ফোরক অভিযোগ বড় ধাক্কা হতে পারে। বিশেষত পঞ্জাবে, যেখানে ইতিমধ্যেই দল ভাঙন দেখা দিচ্ছে।

জোট, কৌশল, মুখ্যমন্ত্রী সম্ভাব্য নাম সব আলোচনার মাঝেই এই অভিযোগ বিরোধী শিবিরকে শক্তিশালী অস্ত্র দিয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে আম আদমি পার্টি সব পক্ষই এই মন্তব্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিজেপির মন্তব্য “এই অভিযোগ নতুন নয়। কংগ্রেসের সংস্কৃতিই এমন।” AAP বলেছে “পঞ্জাবের মানুষ অনেক আগেই বুঝে গেছেন কংগ্রেসে টাকা ছাড়া কিছু হয় না।”

কংগ্রেস অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে এটি “ব্যক্তিগত হতাশা”, বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কহীন। দলের মুখপাত্র বলেছেন “কেউ প্রমাণ দিতে পারলে দিন। শুধুমাত্র কোনও পদ না পাওয়ার ক্ষোভে নেতৃত্বকে অপমান করা গ্রহণযোগ্য নয়।” তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যেখানে আগেও একই অভিযোগ উঠেছে, সেখানে প্রশ্ন তো থেকেই যায়।

ডঃ নবজ্যোত সিধুর অভিযোগ কেবল একটি মন্তব্য নয়; এটি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সংকটের গভীরতাকে তুলে ধরছে। গণতন্ত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং আদর্শিক রাজনীতি এই তিনটি বিষয় আবারও কেন্দ্রে উঠে এসেছে। জনগণের প্রশ্ন—এবার গাঁধীরা কি জবাব দেবেন?

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular