দিল্লি বিস্ফোরণে মহারাষ্ট্রের মুসলিম বিধায়কের মন্তব্যে বিতর্ক

abu-azmi-delhi-blast-controversy-sp-backs-accused

নয়াদিল্লি: দিল্লির লালকেল্লা মেট্রোর কাছে হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নতুন নতুন বিতর্ক মাথা তুলছে। এবার সেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা ও মহারাষ্ট্রের বিধায়ক আবু আজমি। বুধবার তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “কোনও নির্দোষ মানুষকে গ্রেফতার করা উচিত নয়।”

Advertisements

আপাতভাবে মানবিক শোনালেও, তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে  কারণ এই বক্তব্য তিনি করেছেন উমর মোহাম্মদ, ডা. মুজাম্মিল শাকিল এবং ডা. শাহিন-এর প্রসঙ্গে, যারা বর্তমানে দিল্লি বিস্ফোরণ মামলায় জঙ্গি সংযোগের অভিযোগে তদন্তাধীন।

   

বিশ্বজুড়ে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ৪টি নতুন সামরিক ঘাঁটি তৈরি করতে চায় আমেরিকা

সূত্র অনুযায়ী, এই তিনজনই জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছে তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। দিল্লি, হরিয়ানা এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের একাধিক যৌথ অভিযানে এই ডাক্তারদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, এবং তাঁদের কাছ থেকে বিস্ফোরক দ্রব্যও উদ্ধার হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, এঁদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক হয়েও চুপিসারে জঙ্গি মডিউলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এই অবস্থায় আবু আজমির মন্তব্য কার্যত সমাজবাদী পার্টির অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। বিজেপি এবং কংগ্রেস দুই শিবির থেকেই কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। বিজেপির মুখপাত্র একরাম হুসেন বলেন, “যে দলে একসময় সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করার চেষ্টা হয়েছিল, তাদের কাছ থেকে এমন মন্তব্য অস্বাভাবিক নয়। সমাজবাদী পার্টি সবসময়ই এই দেশবিরোধী শক্তিগুলির প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়ে এসেছে।”

Advertisements

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আবু আজমির এই মন্তব্য শুধুমাত্র ব্যক্তিগত মত নয় — বরং এটি সমাজবাদী পার্টির পুরনো অবস্থানের ধারাবাহিকতা। অতীতে উত্তরপ্রদেশে একাধিক জঙ্গি মামলায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাজ্যের সমাজবাদী সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল। ফলে দিল্লি বিস্ফোরণ ইস্যুতেও তাঁদের এই মনোভাব কার্যত সেই পুরনো রাজনীতির পুনরাবৃত্তি বলেই মনে করছেন অনেকে।

এদিকে, কংগ্রেস নেতারা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে এই ইস্যুতে কিছু বলেননি। তবে বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, খুব শিগগিরই রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ যাদব একসুরে আজমির মন্তব্যের সাফাই দিতে নামবেন। এক বিজেপি নেতা বলেন, “গোদি মিডিয়ার নামে যারা সব সময় তদন্তকে রাজনৈতিক রঙ দিতে চায়, তারাই এখন সন্ত্রাসের অভিযুক্তদের ‘নির্দোষ’ বলে তুলে ধরছে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এনআইএ ইতিমধ্যেই আবু আজমির মন্তব্যের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করছে। কারণ, এ ধরনের রাজনৈতিক বিবৃতি তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর কথায়, “এই মুহূর্তে দেশজুড়ে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে কোনও রাজনৈতিক বার্তা যেন বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সেটাই সবচেয়ে জরুরি।”

রাজনৈতিক মহলে এখন বড় প্রশ্ন সমাজবাদী পার্টি কি এই ইস্যুতে নিজেকে আরও বিপাকে ফেলল? না কি, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিতে এই মন্তব্য একটি সচেতন পদক্ষেপ? আপাতত এই মন্তব্য দিল্লি বিস্ফোরণ তদন্তের মতোই রাজনৈতিক অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।