দিল্লি বিস্ফোরণের ৪৮ ঘণ্টা পর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর, তদন্তে NIA

নয়াদিল্লি: দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের (Delhi Blast) ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও তদন্তের অগ্রগতি জানতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন ৭, লোককল্যাণ মার্গে বসে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (CCS)-র বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত ডোভাল, গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা।

Advertisements

ভুটান সফর শেষে দেশে ফিরেই বিমানবন্দর থেকে সরাসরি লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ (LNJP) হাসপাতালে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিস্ফোরণে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের চিকিৎসার খোঁজ নেন এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নিরাপত্তা আধিকারিকরা আহতদের শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে জানান।

   

আহতদের সঙ্গে দেখা করার পর প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন—
“দিল্লি বিস্ফোরণে আহতদের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করেছি। তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। যারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত, প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে।”

গত সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে যানজটে আটকে থাকা একটি Hyundai i20 গাড়ি-তে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, গাড়িটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়, আশপাশের একাধিক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ঘটনাস্থলে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই মামলার তদন্তভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)-র হাতে তুলে দেয়। NIA-র পক্ষ থেকে SP স্তরের অফিসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা হয়েছে।

Advertisements

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে,  এই হামলার নেপথ্যে থাকতে পারে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ (JeM)-এর একটি সক্রিয় মডিউল। ২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মতো সমন্বিত নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। শুধুমাত্র দিল্লিই নয়, গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদ-কেও টার্গেট করা হয়েছিল। প্রায় ২০০টি IED প্রস্তুত করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। 

গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী জঙ্গিদের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু ছিল লালকেল্লা, ইন্ডিয়া গেট, কনস্টিটিউশন ক্লাব, গৌরি শঙ্কর মন্দির, প্রধান রেল স্টেশন, শপিং মল ও জনবহুল এলাকা। তদন্তকারীদের মতে, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল শুধু হতাহতের ঘটনা ঘটানো নয়, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়া এবং বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করা।

অমিত শাহ বলেন, “দোষীদের কাউকেই ছাড়া হবে না। দেশের নিরাপত্তাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।” রাজনাথ সিং জানান, এই ধরনের হামলার মোকাবিলায় দেশ সম্পূর্ণ প্রস্তুত, জড়িতদের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।