নয়াদিল্লি, ১২ নভেম্বর: লাল কেল্লার কাছে সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের আতঙ্ক কাটেনি , কিন্তু তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়ংকর একটা ছবি। পাকিস্তান-ভিত্তিক জৈশ-ই-মোহাম্মদের (জেএম) ‘হোয়াইট কলার’ ইসলামিস্ট টেরর মডিউল শুধু দিল্লিতে সিরিয়াল বোম্বিংয়ের পরিকল্পনা করেনি, তাদের প্রধান টার্গেট ছিল উত্তরপ্রদেশের ধর্মীয় স্থানগুলো।
বিশেষ করে অয়োধ্যার রাম মন্দিরে ৬ ডিসেম্বর একটা বড় হামলা। বাবরি মসজিদ ধ্বংসকারীর দিনে এই হামলা করে সম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর ছক ছিল তাদের। এই মডিউলে র্যাডিকালাইজড ডাক্তাররা ছিল মূল চালক, যারা ফরিদাবাদ থেকে বিস্ফোরক সংগ্রহ করে দিল্লিতে গাড়ি কিনে লোডিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু, ২৫-এর বেশি আহত এই ট্র্যাজেডির পর এনআইএ-র তদন্তে এই রহস্য উন্মোচিত হয়েছে, যা দেশের নিরাপত্তাকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
Delhi Blast: সমাজমাধ্যমে ‘উত্তেজনামূলক’ পোস্ট করায় পুলিশের জালে ৫!
সেই বিস্ফোরণের মুহূর্তটা যেন এখনও চোখে ভাসে। সোমবার সন্ধ্যা ৬:৫০-এর দিকে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের গেট নম্বর ১-এর কাছে রেড লাইটে থামা সাদা হুন্ডাই আই-২০ গাড়িটা হঠাৎ প্রচণ্ড ধমাকের সঙ্গে উড়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে আগুনের লেলিহান শিখা, ধোঁয়ার ঘন মেঘ এবং চারপাশে ছড়ানো ধ্বংসাবশেষ। নিকটবর্তী সাতটি গাড়ি পুড়ে ছাই, রাস্তায় রক্তের ছিটে এবং মৃতদেহের অংশ।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এটি ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট-ভিত্তিক বিস্ফোরক (ANFO), যা ফিদায়িন-স্টাইলের হামলার জন্য তৈরি। গাড়ির চালক ছিলেন পুলওয়ামার ডাক্তার মোহাম্মদ উমর নবী, যিনি ফরিদাবাদের আল ফালাহ ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত ছিলেন।
সূত্র বলছে, সহকর্মীদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে প্যানিকে উমর গাড়িটি অকালে ফাটিয়ে ফেলেন, যাতে পরিকল্পিত সিরিয়াল অ্যাটাক অর্ধসমাপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু তদন্তে এখন স্পষ্ট হয়েছে, লাল কেল্লা ছিল নয়টি টার্গেটের একটা প্রধান ছিল অয়োধ্যা এবং বারাণসীর মন্দিরগুলো।
এনআইএ-র তদন্তে উঠে এসেছে যে, এই মডিউল ৬ ডিসেম্বর অয়োধ্যায় বড় একটা বোমা হামলার পরিকল্পনা করছিল। গ্রেফতার হওয়া ড. শাহিন শাহিদের কনফেশন থেকে জানা গেছে, অয়োধ্যায় একটা স্লিপার সেল সক্রিয় করা হয়েছিল, যাতে রাম মন্দিরের ভিড়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়ানো যায়। বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরও ছিল টার্গেট, সেখানে হাসপাতাল এবং ভিড়ভাট্টা জায়গাগুলোতে ২৬/১১-স্টাইলের সিরিয়াল অ্যাটাকের ছক।
দিল্লিতে দীপাবলির সময় ভিড়ে হামলা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পুলিশের ছাপামারির ভয়ে সেটা পিছিয়ে যায়। মডিউলের লিস্টে ছিল দিল্লির রেড ফোর্ট, ইন্ডিয়া গেট, কনট প্লেস, গৌরী শঙ্কর মন্দির এবং দেশজুড়ে রেল স্টেশন, শপিং মল। এই ‘হোয়াইট কলার’ মডিউলে শিক্ষিত ডাক্তাররা ছিল মূল, যারা টেলিগ্রাম গ্রুপে কোঅর্ডিনেট করে বিস্ফোরক সংগ্রহ করছিল।


