সমাজের দ্বিচারিতা ব্যাপারে মুখ খুললেন কোয়েল

বায়োস্কোপ ডেস্ক, কলকাতা: ভালো আছি,ভালো থেকো/আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” সবাই জিজ্ঞাসা করত, “কেমন আছো?” উত্তরে যদি বলি, ভালো নেই৷ তবে কেমন যেন অতি সহজ অংকের…

Koel Mallick

বায়োস্কোপ ডেস্ক, কলকাতা: ভালো আছি,ভালো থেকো/আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো”
সবাই জিজ্ঞাসা করত, “কেমন আছো?” উত্তরে যদি বলি, ভালো নেই৷ তবে কেমন যেন অতি সহজ অংকের সমাধান এর মতন বলে দেয়, আমি কী কী উপায়ে ভালো থাকতে পারি?
অথচ ধৈর্য ধরে শুনেছে ক’জন? আর যে কজন শুনেছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই তুলনা টেনে দিয়ে বলেছে ‘ ওরা এরকম করতে পারলে তুই পারবি না?’ অথচ আমার মনের মঞ্চে চেনা মানুষের অচেনা হয়ে যাওয়া, অভিনয় এর খেলায় আমি জর্জরিত বিপর্যস্ত তা গভীরভাবে বুঝতে চেয়েছে ক’জন? এতদিন যখন ভালো ছিলাম না,ততদিন কেন যাকেই মন খারাপের কথা বলতে গিয়েছি,সে বলে দিয়েছে,’একটু ঘুরে আয় সব ঠিক হয়ে যাবে’।কিংবা কেউ তো হাস্যকরভাবে বলেছে, একটু ওয়েব সিরিজ দেখ।আড্ডা মার।পার্টি কর।থিংস উইল বি অল রাইট।’
আচ্ছা!এতটাই সহজ।আমার মন ম্যানেজমেন্ট এতটাই যখন সহজ ছিল সবার কাছে,আমার কাছে আমি কেন কঠিন হল পুরোটা?
আসলে আমি বুঝতে পারিনি না? নাকি আমি বোঝাতে পারিনি?
ইতি,
নিজের কথা কাউকে বোঝাতে না পারা কেউ

এমন অনেক প্রশ্ন থেকে যায়, অনেক এমন প্রাণ যারা হয়তো আজ আর আমাদের মধ্যে নেই তাদের না লেখা চিঠিতে। তারা চলে যাবার পরে তখন হঠাৎ করে সবাই বলতে শুরু করে,’ আহা রে! এত কষ্ট ছিল বুঝতেই পারিনি। একবার যদি বুঝতাম!’

আত্মহত্যার পর এর যে সামাজিক দ্বিচারিতা আমরা সর্বত্র লক্ষ্য করি ঠিক সেটাকেই অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক তুলে ধরলেন নিজের ভাবনায়। সাইকোলজির ছাত্রী হওয়ার জন্য মনোবিজ্ঞান নিয়ে তার অগাধ জ্ঞান।

চলতি মাসটি ‘সুইসাইড প্রিভেনসান মান্হ’। সামাজিক এই বিচারকের কোথায় কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick) উল্লেখ করলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। লিখলেন, যখন কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেয়, তারপরে সবাই দুঃখ প্রকাশ করে। বলে একবারের জন্য যদি তারা বুঝতে পারত তবে হয়তো এ ঘটনা ঘটত না। কিন্তু বেঁচে থাকাকালীন যখন সে মানসিক কোন সমস্যার ভেতর দিয়ে যায় তখন কেউ তার কথা শোনে না, কেউ বিশ্বাস করে না উপরন্তু বলে দেওয়া হয়, তারা নাকি অ্যাটেনশন সিকার। এই সমাজের আরও অনেক কিছু করার আছে।”

অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ থেকে শুরু করে দর্শকদের মধ্যে পরিচিত একজন দক্ষ অভিনেত্রী এবং বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে। তার সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই বোঝা যায় তিনি সর্বদা পজিটিভিটির মন্ত্র ছড়িয়ে দিতে চায়। মনের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে তার এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে এই সমাজের কাছে আশার আলো দেখাবে।