HomeBusinessস্বনির্ভরতায় শীর্ষে মহারাষ্ট্রের মহিলারা, কত নম্বরে বাংলা?

স্বনির্ভরতায় শীর্ষে মহারাষ্ট্রের মহিলারা, কত নম্বরে বাংলা?

- Advertisement -

দেশের স্বনির্ভর ভারতের স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন দেশের মহিলারা। প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা যোজনার আওতায় মহিলাদের উদ্যোগই (Women entrepreneurs) আজ ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মহারাষ্ট্র ও ওডিশা—এই দুই রাজ্যের ৭৯ শতাংশ মুদ্রা ঋণপ্রাপকই মহিলা। আর এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে সম্মানজনক চতুর্থ স্থানে, যেখানে মহিলাদের অংশ ৭৩ শতাংশ।

মহিলাদের উদ্যোগেই বদলাচ্ছে ভারতের গ্রামীণ চিত্র

স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার (SBI Research) গবেষণা বলছে, মহারাষ্ট্র ও ওডিশায় মহিলাদের নেতৃত্বে গঠিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (SME) একদিকে যেমন আত্মনির্ভরতার পথ দেখাচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে। রাজ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র ও ওডিশার পরই তালিকায় রয়েছে ঝাড়খণ্ড (৭৫%), পশ্চিমবঙ্গ (৭৩%), বিহার (৭১%) ও মধ্যপ্রদেশ (৭০%)।

   

এই তালিকা স্পষ্ট করে দেয়, পূর্ব ও মধ্যভারতের রাজ্যগুলি মহিলাদের ক্ষুদ্র উদ্যোগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। বিশেষ করে বাংলার ৭৩% মুদ্রা ঋণপ্রাপক মহিলা হওয়া এক বিশাল অর্জন, যা রাজ্যের নারী ক্ষমতায়ন এবং স্বনির্ভরতার গতিপথকেই তুলে ধরে।

পশ্চিমবঙ্গের মহিলাদের সাফল্যের কাহিনি

রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে মহিলারা এখন ক্ষুদ্র ব্যবসা, হস্তশিল্প, কৃষিভিত্তিক উদ্যোগ এবং গৃহভিত্তিক পরিষেবার মাধ্যমে পরিবার ও সমাজে আর্থিক স্থিতি নিয়ে আসছেন। অনেকেই বলছেন, মুদ্রা ঋণের সহজলভ্যতা ও স্বল্পসুদে পাওয়া অর্থই তাঁদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার এক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা চন্দনা মণ্ডল জানান, “মাত্র ৫০ হাজার টাকার ঋণেই আমি মুড়ি, চানাচুর ও পাঁপড় তৈরির ছোট ব্যবসা শুরু করেছিলাম। এখন মাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা রোজগার করছি। আগের মতো আর স্বামীর উপার্জনের ওপর নির্ভর করতে হয় না।”

অন্যান্য রাজ্যের চিত্র

তালিকার নিচের দিকে দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ (৬০%), গুজরাট (৫৯%) ও আসাম (৫৫%)-এ তুলনামূলকভাবে মহিলাদের অংশগ্রহণ কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রাজ্যগুলিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা, সচেতনতার অভাব এবং প্রশিক্ষণের অপ্রতুলতা এর কারণ হতে পারে।

নারী ক্ষমতায়নের পথে ভারত

মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৭৫% ঋণই দেওয়া হয়েছে মহিলাদের, যার মধ্যে অধিকাংশই প্রথম প্রজন্মের উদ্যোগপতি। কেন্দ্র সরকারের তরফে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগ শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নয়, নারীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “মহিলাদের এই অংশগ্রহণ ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় একটি নীরব বিপ্লব ঘটাচ্ছে। আরও প্রশিক্ষণ, বাজারসংযোগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিলে তারা আরও অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারেন।”

মহারাষ্ট্র ও ওডিশার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতে মহিলাদের উদ্যোগ আজ দেশের আর্থিক স্বনির্ভরতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী দিনে নারী-নেতৃত্বাধীন অর্থনীতি ভারতের ভবিষ্যতের অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

- Advertisement -
Business Desk
Business Desk
Stay informed about the latest business news and updates from Kolkata and West Bengal on Kolkata 24×7
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular