Bangladesh 50: ঘাড়ের কাছে ভারতীয় সেনা, পরাজয় বুঝে বাঙালি বুদ্ধিজীবী খুন শুরু পাকিস্তানের

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: মাথার উপর চক্কর কাটছিল ভারতীয় বিমান বাহিনী। গোলা বর্ষণে ঢাকা বিধ্বস্থ। ঢাকা ঘিরছিল ভারতীয় ও বাংলাদেশি (Bangladesh) মুক্তিবাহিনী। পরাজয় নিশ্চিত। এটা বুঝেই পাকিস্তান…

Bengali intellectuals killing

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: মাথার উপর চক্কর কাটছিল ভারতীয় বিমান বাহিনী। গোলা বর্ষণে ঢাকা বিধ্বস্থ। ঢাকা ঘিরছিল ভারতীয় ও বাংলাদেশি (Bangladesh) মুক্তিবাহিনী। পরাজয় নিশ্চিত। এটা বুঝেই পাকিস্তান জেনারেন রাও ফরমান আলি তার ডাইরিতে লেখা নামগুলো তুলে দিলেন সেনাবাহিনীর হাতে। নাম মিলিয়ে শুরু হল খুন। ১৪ ডিসেম্বর শুরু হয়ে গেল ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। ঠিক ৫০ বছর আগের কথা। এই কাজে পাক সেনার মদত দিল আলবদর ও আলসামস সহ কিছু পাকপন্থী রাজাকার গোষ্ঠী।

উপমহাদেশের ইতিহাসে এত বড় মাপের বুদ্ধিজীবী খুনের কারণ কী? গবেষণায় উঠে এসেছে, পাকিস্তান সরকার চেয়েছিল যে ভূখণ্ড হাতছাড়া হতে চলেছে তাদের সরকার যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। মেধাশূন্য জাতি হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করুক।

Bengali intellectuals killing

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সংঘর্ষ শুরু থেকে টানা নয় মাসের পুরো সময়ে পাকিস্তানি সেনা পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করেছে। ডিসেম্বর মাসের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে।

জেনারেল রাও ফরমান আলির পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী শুরু করল অভিযান। কবি সাহিত্যিক, শিক্ষক, অধ্যাপক, আইনজীবী, শিল্পী, কলাকুশলী, নাট্যকার, যাকে যেমন পারল তুলে আনল পাক সেনা। এর পর শুরু হয় গণহত্যা। তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত দেহ ঢাকার রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পরে মিলেছিল। অনেকের দেহ শনাক্তও করা যায়নি। বহুজন এখনও নিখোঁজ।

১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের এই গণহত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হয় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। পাক বাহিনী আত্মসমর্পণের পর নবগঠিত বাংলাদেশের সরকার পাক জেনারেল রাও ফরমান আলির নোটবুক বাজেয়াপ্ত করে। সেই নোটবুকেই লেখা ছিল বহু নাম।