আহমেদাবাদ: আহমেদাবাদে জগন্নাথদেবের রথযাত্রায় আনন্দের মাঝেই হুলস্থুল। বৃহস্পতিবার রথযাত্রা চলাকালীন শোভাযাত্রার সঙ্গে থাকা কিছু হাতি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, যার ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জনতার মধ্যে। আহত হয়েছেন অন্তত দুই জন।

দিশেহারা হাতি

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ, যখন রথযাত্রা মিছিল আহমেদাবাদের ঘনবসতিপূর্ণ খাড়িয়া এলাকা দিয়ে অতিক্রম করছিল। সেই সময় একটি সুসজ্জিত হাতি আচমকাই দিশাহীন হয়ে পড়ে এবং উল্টো পথে দৌড়াতে শুরু করে। আরেক-দু’টি হাতিও দিশাহীনভাবে জনতার মধ্যে ছুটে যায়, যার ফলে হুড়োহুড়ি ও চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।

একটি ভিডিও ফুটেজ, যা পিটিআই সংবাদ সংস্থা শেয়ার করেছে, তাতে দেখা যায় লোকজন প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করছে, মহাওত (হাতির চালক) প্রাণপণে হাতিদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। এক পর্যায়ে একটি হাতিকে জনতার দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়, ফলে ভক্ত ও স্থানীয় বাসিন্দারা সরু গলির মধ্যে দিয়ে পালাতে বাধ্য হন।

রথযাত্রা উপলক্ষে ১৪-১৫ লক্ষ মানুষের সমাগম, প্রথমবার এআই প্রযুক্তি Ahmedabad Rath Yatra Incident

প্রতিবছরের মতো এবারও আহমেদাবাদে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা এক বিশাল আয়োজনে পরিণত হয়েছে। মোট ১৬ কিলোমিটার পথজুড়ে চলবে এই শোভাযাত্রা, যাতে অংশ নিয়েছে প্রায় ১৮টি হাতি, ১০০টি ট্রাক, ৩০টি আখড়া ও বহু ভজন মণ্ডলী।

সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, এ বছর প্রায় ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ ভক্ত রথযাত্রা দেখতে রাস্তায় ভিড় জমিয়েছেন। জননিরাপত্তা রক্ষার্থে প্রায় ২৩,৮০০ নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে শহর জুড়ে।

এছাড়া প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা, যা জনসাধারণের চলাচল রিয়েল টাইমে পর্যবেক্ষণ করবে এবং যেকোনো রকম হুড়োহুড়ি বা পদদলিত হওয়ার পরিস্থিতি এড়াতে সতর্কতা দেবে।

চলছে তদন্ত, হাতিগুলিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে

আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে, এবং হাতিগুলিকে শোভাযাত্রা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভক্তদের উদ্দেশ্যে সতর্ক বার্তা জারি করা হয়েছে এবং অনুষ্ঠান এলাকায় সতর্ক নজরদারির ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।

আহমেদাবাদের জগন্নাথ রথযাত্রা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং গুজরাটের অন্যতম বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই রকম একটি আয়োজনে এমন একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে, তবে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা ঠেকাতে আরও সংবেদনশীল ব্যবস্থাপনার দাবি উঠেছে জনমতেও।