দিঘায় প্রথম রথযাত্রা, কী প্রসাদ মিলবে ভক্তদের

দিঘা (Digha) এবার সাক্ষী থাকল এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের। সদ্য উদ্বোধিত দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু হল প্রথম রথযাত্রা। উন্মাদনা, ভক্তি আর উৎসাহে ভরপুর সৈকত শহর।…

Jagannath temple Digha

দিঘা (Digha) এবার সাক্ষী থাকল এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের। সদ্য উদ্বোধিত দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু হল প্রথম রথযাত্রা। উন্মাদনা, ভক্তি আর উৎসাহে ভরপুর সৈকত শহর। লাখ লাখ পর্যটক এবং ভক্ত ভিড় জমিয়েছেন দিঘার মন্দির চত্বরে। রথের রশিতে টান দিতে হাজির হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তিনিই নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সমস্ত প্রস্তুতি তদারকি করছেন।

পুরীর রথযাত্রার আদলে দিঘাতেও (Digha) ছিল স্বর্ণঝাড়ু দিয়ে রাস্তা ঝাড়ার বিশেষ মুহূর্ত। রথযাত্রা শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী স্বর্ণঝাড়ু দিয়ে রথপথ পরিষ্কার করেছেন। সঙ্গে ছিলেন ইস্কন কলকাতার সহ-সভাপতি রাধারমন দাস।

   

বৃহস্পতিবার থেকেই দিঘা (Digha) জগন্নাথ মন্দিরে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোপাঠ। গতকাল তিন দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়েছে ৫৬ ভোগ। আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই মন্দিরে পুজো শুরু হয়েছে। দুপুর ২টো থেকে আড়াইটের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে অভিষেক অনুষ্ঠান।

ঠিক আড়াইটের সময় গড়িয়ে যায় রথের চাকা। প্রথমে সুদর্শন চক্রের বের হওয়া, তারপর একে একে বলরাম, সুভদ্রা এবং সবশেষে জগন্নাথদেবের রথ।

দিঘার রথের বিশেষত্ব কী?

তিনটি রথই সুসজ্জিত। কাঠের কাজ এবং রঙের ছোঁয়ায় তৈরি হয়েছে অনবদ্য শিল্পকর্ম। দেড় কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে এই রথযাত্রা পৌঁছবে জগন্নাথের মাসির বাড়িতে। দিঘার (Digha) পুরনো জগন্নাথ মন্দিরকেই মাসির বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিম কাঠের তৈরি বিগ্রহগুলি রথে চেপে মাসির বাড়িতে গেলেও নতুন মন্দিরে স্থায়ীভাবে বিরাজ করবে পাথরের বিগ্রহ। আগামী সাত দিন দুই জায়গাতেই ভক্তরা দেবদেবীর দর্শন করতে পারবেন।

কী প্রসাদ পাবেন ভক্তরা?

এবার আসা যাক প্রসাদের কথায়। অনেক ভক্তেরই জানার আগ্রহ, রথযাত্রার দিনে দিঘার (Digha) মন্দির থেকে কী ধরনের প্রসাদ পাওয়া যাবে।

Advertisements

রথ চলাকালীন দেবতাদের জন্য শুকনো প্রসাদ রাখা হয়েছে। থাকছে নানা ধরনের মিষ্টি, গজা এবং ড্রাই ফ্রুটস। তবে রথে কোনও ভাত, ডাল বা খিচুড়ি পরিবেশন করা হবে না। বড় ধরনের রান্না করা প্রসাদ দেওয়া হবে মাসির বাড়িতে। সেখানেই থাকবে ৫৬ ভোগের বিশেষ আয়োজন।

মাসির বাড়িতে যে প্রসাদ দেওয়া হবে, তার মধ্যে থাকছে—খিচুড়ি, ল্যাবরা, বেগুন ভাজা, পায়েস, পাঁচভাজা, চাটনি, দই এবং আরও নানা রকমের সুস্বাদু পদ।

দিঘার (Digha) প্রথম রথযাত্রায় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই কারণে কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল মোতায়েন করা হয়েছে। দিঘার রথপথের দুই ধারে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। রথের দড়ি সেই ব্যারিকেডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীরা নিরাপদে টান দিতে পারেন।

যেখানে বেশি ভিড়, সেখানকার রথ কিছুক্ষণ থেমে থাকবে, যাতে সবাই জগন্নাথের দর্শন করতে পারেন এবং রথের রশিতে টান দেওয়ার সুযোগ পান।

পুরী থেকে শিক্ষা নিয়ে দিঘার (Digha) প্রথম রথযাত্রা হয়ে উঠেছে এক নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, ভক্তদের উচ্ছ্বাস, এবং সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি এই উৎসবকে আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।

এ বছরের দিঘা (Digha) রথযাত্রা শুধু ভক্তির নয়, রাজ্য সরকারের কড়া নজরদারিতে এক ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক ঘটনা। ভক্তরা রথের দড়িতে টান দিতে পারবেন এবং দেবতার প্রসাদও গ্রহণ করতে পারবেন।