নিজস্ব সংবাদদাতা, এগরা: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নিজের গড় বলে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরে ফের বড় ধাক্কা খেল বিজেপি। জেলার এগরা ১ ব্লকের বরিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের খালিনা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে বিজেপি কোনও প্রার্থীই দিতে পারল না। ফলে ৯টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করল তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা।
বিরোধীশূন্য মনোনয়ন পর্বেই জয় তৃণমূলের
সোমবার ও মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা এবং তোলার নির্ধারিত সময়সীমা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটিও বিরোধী মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। এর ফলে পূর্ব থেকেই ফল ঘোষণা হয়ে যায় এবং সমস্ত আসনে জিতে যায় তৃণমূলের প্রার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্বাচনী এই সোসাইটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৮৩২ জন এবং মোট আসন ছিল ৯টি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়ার পর তৃণমূল শিবিরে শুরু হয় উল্লাস। বিজয় মিছিল, সবুজ আবির মাখানো ও একে অপরকে অভিনন্দনের মধ্যে দিয়ে আনন্দ ভাগ করে নেন দলের কর্মী ও নেতা-নেত্রীরা।
দলনেত্রীকে জয় উৎসর্গ
এই সমবায় সমিতির বিজয়ী প্রার্থী ও বরিদা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সিদ্ধেশ্বর বেরা বলেন, “এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়। আমরা এই বিজয় আমাদের প্রিয় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করছি।”
বিজেপির অভিযোগ: “রাতের অন্ধকারে নির্বাচন”
এই জয়কে কেন্দ্র করে বিজেপি নেতৃত্ব কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। ব্লক বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শক্তিপদ সাহু বলেন, “তৃণমূল গণতন্ত্র মানে না। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অন্ধকারে রেখে নিয়ন্ত্রণ করছে। খালিনা সমবায় সমিতি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তার ক্যাশিয়ার আর্থিক তছরুপে অভিযুক্ত। তাই আমরা এই নির্বাচনে প্রার্থী দিইনি। কিন্তু সামনেই রয়েছে বরিদা সমবায় সমিতির নির্বাচন। সেখানে আমরা খোলা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি—ক্ষমতা থাকলে জিতে দেখাক তৃণমূল।”
রাজনীতির বার্তা পরিষ্কার?
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক সমবায় নির্বাচনে পরাজিত হচ্ছে বিজেপি। এই জয় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনিক সাফল্য ও বিরোধী শূন্য রাজনীতির প্রতিফলন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। অনেকেই মনে করছেন, সামনে আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরণের লাগাতার সাফল্য তৃণমূলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
তৃণমূলের তরফে এগরা বিধায়ক ও কাঁথি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান তরুণ কুমার মাইতি ফোনে সমস্ত জয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “এই জয় দেখিয়ে দিল, মানুষ উন্নয়নের পাশে আছে। বিরোধীরা যতই চক্রান্ত করুক, পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের ঘাঁটি ছিল, আছে এবং থাকবে।”