দিল্লি আইআইটির কোয়ান্টাম অগ্রগতিতে সাইবার সুরক্ষা জোরদার হচ্ছে

ভারত কোয়ান্টাম (iit-delhi) যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে, যা কোয়ান্টাম সাইবার সিকিউরিটির বাস্তব সময়ের প্রয়োগের পথ প্রশস্ত করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা…

iit-delhi success in quantum technology

ভারত কোয়ান্টাম (iit-delhi) যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে, যা কোয়ান্টাম সাইবার সিকিউরিটির বাস্তব সময়ের প্রয়োগের পথ প্রশস্ত করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইআইটি-দিল্লি (iit-delhi) ক্যাম্পাসে এক কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে ফ্রি-স্পেস অপটিক্যাল লিঙ্কের মাধ্যমে কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট ব্যবহার করে নিরাপদ কোয়ান্টাম যোগাযোগ সফলভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। এই সাফল্যের মাধ্যমে ভারত একটি “নতুন কোয়ান্টাম যুগে” প্রবেশ করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কোয়ান্টাম যোগাযোগে ভারতের অগ্রগতি

কোয়ান্টাম (iit-delhi) যোগাযোগ হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের নীতির উপর ভিত্তি করে তথ্য স্থানান্তর করে। এই প্রযুক্তি ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ ব্যবস্থার তুলনায় অত্যন্ত নিরাপদ এবং হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি কম। কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্টের (iit-delhi) মাধ্যমে দুটি কণা এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে একটির অবস্থা পরিবর্তন হলে অন্যটির অবস্থাও তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তিত হয়, দূরত্ব যতই হোক না কেন। এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়, যা বর্তমান ক্রিপ্টোগ্রাফিক পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ।

   

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইআইটি-দিল্লির (iit-delhi) গবেষক দল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে ফ্রি-স্পেস অপটিক্যাল লিঙ্কের মাধ্যমে সফলভাবে তথ্য প্রেরণ করেছে। এই পরীক্ষায় কোয়ান্টাম কী ডিস্ট্রিবিউশন (কিউকেডি) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা নিরাপদ যোগাযোগের জন্য এনক্রিপশন কী তৈরি করে। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে সামরিক এবং বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রেই নিরাপদ যোগাযোগ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রযুক্তির তাৎপর্য

কোয়ান্টাম (iit-delhi) যোগাযোগের এই সাফল্য ভারতের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলা এবং ডেটা চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী এনক্রিপশন পদ্ধতি ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কাছে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে, কোয়ান্টাম-ভিত্তিক (iit-delhi) যোগাযোগ ব্যবস্থা একটি অপরিহার্য সমাধান হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্টের মাধ্যমে তৈরি কীগুলো হ্যাক করা প্রায় অসম্ভব, কারণ যেকোনো হস্তক্ষেপ তাৎক্ষণিকভাবে সনাক্ত করা যায়।

এই প্রযুক্তি সামরিক ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই সাফল্য ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। কোয়ান্টাম যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা আমাদের সামরিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে হ্যাকিং-প্রতিরোধী করতে পারব।” এছাড়াও, এই প্রযুক্তি ব্যাঙ্কিং, স্বাস্থ্যসেবা এবং সরকারি সেবার মতো বেসামরিক ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

আইআইটি-দিল্লির ভূমিকা (iit-delhi)

আইআইটি-দিল্লির (iit-delhi) গবেষক দল এই পরীক্ষায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। তাদের গবেষণা কেন্দ্রে ফ্রি-স্পেস অপটিক্যাল লিঙ্ক স্থাপন করা হয়েছিল, যা বায়ুমণ্ডলের মাধ্যমে লেজার-ভিত্তিক তথ্য স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বায়ুমণ্ডলীয় হস্তক্ষেপ, যেমন কুয়াশা, বৃষ্টি বা ধূলিকণা, যা সংকেতের গুণগত মানকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে, আইআইটি-দিল্লির গবেষকরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলভাবে এক কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে তথ্য প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

এই প্রকল্পে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) এবং অন্যান্য বিজ্ঞানী গোষ্ঠীও অংশ নিয়েছে। আইআইটি-দিল্লির (iit-delhi) একজন গবেষক জানিয়েছেন, “এই সাফল্য কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নয়, ভারতের বিজ্ঞানীদের সক্ষমতার প্রমাণ। আমরা ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তিকে আরও দীর্ঘ দূরত্বে এবং বাস্তব সময়ের অ্যাপ্লিকেশনে প্রয়োগ করার জন্য কাজ করছি।”

Advertisements

ভারতের কোয়ান্টাম যাত্রা

এই সাফল্য ভারতের কোয়ান্টাম প্রযুক্তি গবেষণার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। ২০২০ সালে ভারত সরকার ন্যাশনাল মিশন অন কোয়ান্টাম টেকনোলজিস অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশনস (এনএম-কিউটিএ) চালু করেছিল, যার লক্ষ্য ছিল কোয়ান্টাম প্রযুক্তির গবেষণা ও উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা(iit-delhi)। এই মিশনের অধীনে ভারত কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, কোয়ান্টাম যোগাযোগ এবং কোয়ান্টাম সেন্সিংয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশ, যেমন চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কোয়ান্টাম যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে(iit-delhi)। চীন ২০১৬ সালে মিকুইয়াস নামে বিশ্বের প্রথম কোয়ান্টাম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল এবং দীর্ঘ দূরত্বে কোয়ান্টাম যোগাযোগ স্থাপন করেছে। ভারতের এই সাফল্য তাকে এই প্রতিযোগিতায় একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

এই প্রযুক্তির বাস্তবায়ন ভারতের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বদলে দেবে। সামরিক ক্ষেত্রে এটি গোপনীয় তথ্য প্রেরণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। বেসামরিক ক্ষেত্রে, ব্যাঙ্কিং লেনদেন, স্বাস্থ্য তথ্য এবং সরকারি ডেটা সুরক্ষিত করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। ভবিষ্যতে, ভারত স্যাটেলাইট-ভিত্তিক কোয়ান্টাম যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা দীর্ঘ দূরত্বে এই প্রযুক্তির প্রয়োগকে আরও সহজ করবে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তি কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ভবিষ্যতে আরও জটিল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে(iit-delhi)। উদাহরণস্বরূপ, কোয়ান্টাম যোগাযোগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিংয়ের সঙ্গে মিলিত হলে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড খিদিরপুরে, প্রশাসন ব্যর্থ বললেন শুভেন্দু

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই সাফল্য আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোয়ান্টাম গবেষণা কেন্দ্রের একজন বিজ্ঞানী বলেছেন, “ভারতের এই অগ্রগতি কোয়ান্টাম যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি বিশ্বব্যাপী কোয়ান্টাম প্রযুক্তির প্রতিযোগিতায় ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।” এছাড়াও, ভারতের এই সাফল্য কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

ভারতের এই কোয়ান্টাম যোগাযোগের সাফল্য দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। আইআইটি-দিল্লির (iit-delhi) গবেষক দল এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা ভারতকে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির বিশ্ব মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছে। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং বেসামরিক ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। ভারতের এই অগ্রগতি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, দেশটি কোয়ান্টাম প্রযুক্তির নতুন যুগে পা রাখতে প্রস্তুত।