নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রেখেছে ভারত। সেই পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদের তরফে নতুন হুঁশিয়ারি-যদি চীনও একই পথে হাঁটে এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দেয়, তাহলে ভারতের কী হবে? পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রানা এহসান আফজল এই হুমকি দিয়েছিলেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা দ্রুত এবং জোরালোভাবে এর জবাব দেন। তিনি এই বক্তব্যকে ‘কল্পনাপ্রসূত’ ও ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করেছেন।

কল্পনার উপর ভিত্তি করে ভীতি ছড়াচ্ছে পাকিস্তান

হিমন্ত বিশ্বশর্মা স্পষ্ট করেছেন, “পাকিস্তান কল্পনার ওপর ভিত্তি করে নতুন করে ভীতি ছড়াচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদী ভারতের একটি মূলধারার নদী, যা ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করার পরই প্রবল বর্ষার জলে ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। এই নদীর মোট জলপ্রবাহের মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসে চিন থেকে, যা প্রধানত তুষার গলনের জল এবং টিবেটীয় বর্ষার অল্প অংশ। বাকিটা আসে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, অসম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রবল বর্ষার জল ও নদীনালাগুলোর মাধ্যমে।”

তিনি আরও বলেন, “চিন যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয় , যা এখনও পর্যন্ত কোনো সরকারি ফোরামে অথবা আচরণে দেখা যায়নি – তা হলে অসমের বার্ষিক ভয়াবহ বন্যার মাত্রা কমাতে সহায়ক হতে পারে। কেননা এই নদী ভারতে প্রবেশের পর বন্যা সৃষ্টি করে লাখ লাখ মানুষের জীবনযাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।”

ভূগোল বোঝালেন হিমন্ত brahmaputra river dispute

অর্থাৎ, ব্রহ্মপুত্র নদীর প্রবাহ ভারতের আবহাওয়া, ভূগোল এবং জলবায়ুর ওপর নির্ভরশীল, যা চিনের একক নিয়ন্ত্রণে নেই। এই তথ্যভিত্তিক জবাব দিয়ে হিমন্ত বিশ্বশর্মা পাকিস্তানের নতুন আতঙ্ক সৃষ্টির প্রচেষ্টাকে ‘অসঙ্গত’ এবং ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

এর আগে, ভারতের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে পাকিস্তান ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং ‘জল পাকিস্তানের লাল রেখা’ বলে হুঁশিয়ারি দেয়। পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মুনির এই ইস্যুতে বলেছেন, “এই জল অধিকারের ব্যাপারে কোনও আপস হবে না। আমাদের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় আমরা পিছু হটব না।”

রাজনৈতিক কল্পকাহিনী বলে বিবেচিত

এই সব উত্তেজনার মধ্যে হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্য ভারতের অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে যে, জল সম্পদ নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবহার নিয়ে ভারত জাতীয় স্বার্থে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে৷ পাকিস্তান ও চিনের হুমকিকে সরলীকৃত করে দেখছে না। বরং বাস্তব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেশের স্বার্থ ও জল সম্পদ রক্ষায় সতর্ক ও সচেতন।

সুতরাং, জল সম্পদ নিয়ে পাকিস্তানের এমন হুঁশিয়ারি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কল্পকাহিনী বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার জবাব সেটাই প্রমাণ করেছে—ভীতিহীন, তথ্যভিত্তিক ও বাস্তবমুখী।

Bharat: Amid India’s Indus Waters Treaty suspension, Pakistan’s China-Brahmaputra threat is debunked by Assam CM Himanta Biswa Sarma. He clarifies only 30-35% of Brahmaputra water from China, majorly snowmelt, rest from Indian monsoon. Sarma dismisses Pakistan’s claims as baseless, emphasizing India’s water resource resilience.