শহরে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড! নিজের পিসি শাশুড়িকে খুন করে দেহ টুকরো করে ব্যাগে ভরে ফেলতে গিয়েছিলেন বৌমা ও তার মা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ধরা পড়ে গেলেন তারা। সোমবার ভোরে কুমারটুলি ঘাটের কাছে একটি ট্রলি ব্যাগ থেকে মহিলার টুকরো দেহাংশ উদ্ধার হতেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় দুই অভিযুক্তকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়।
নিহত মহিলার নাম সুমিতা ঘোষ। তাকে খুনের অভিযোগে আটক করা হয়েছে ফাল্গুনী ঘোষ এবং তার মা আরতি ঘোষকে। জানা গেছে, ফাল্গুনীর শাশুড়ির আত্মীয়া ছিলেন সুমিতা, সম্পর্কের দিক থেকে তার “পিসি শাশুড়ি”। তবে ঠিক কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসাত সংলগ্ন কাজিপাড়ার বাসিন্দা ফাল্গুনী ও তার মা রাতের অন্ধকারে এক ট্রলি ব্যাগে দেহ ভরে নিয়ে বের হন। তারা বাগবাজার থেকে আহিরিটোলা ঘাট পর্যন্ত ঘুরে বেড়ান, সম্ভবত সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন দেহাংশ ফেলার জন্য। অবশেষে কুমারটুলি এলাকায় এসে তারা পাঁচিল টপকে ট্রলি ব্যাগটি ফেলার চেষ্টা করেন।
ধরা পড়ার মুহূর্ত
যখন ফাল্গুনী ও তার মা ট্রলিটি ফেলে দিচ্ছিলেন, তখন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সন্দেহ হয়। তারা কাছে গিয়ে দেখতে পান ব্যাগটি ভারী এবং তাতে রক্ত লেগে আছে। সন্দেহ বাড়তেই তারা বাধা দেন এবং তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং ব্যাগ খুলতেই সামনে আসে এক বিভীষিকাময় দৃশ্য—এক মহিলার কাটা দেহাংশ!
উত্তেজিত জনতার ঘেরাও, পুলিশের হস্তক্ষেপ
দেহ উদ্ধারের পর পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তদের পুলিশের গাড়িতে তুলতেও বাধা দেয়। পরে অতিরিক্ত বাহিনী এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ফরেনসিক টিম ও ডগ স্কোয়াডকে ডাকা হয়েছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, এবং কী কারণে তারা এই নৃশংস খুন করল তা জানার চেষ্টা চলছে।
এখনও পর্যন্ত ফাল্গুনীর দেওয়া বয়ান থেকে জানা যাচ্ছে, পারিবারিক বিবাদ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড। তবে সেটি আর্থিক লেনদেন, পারিবারিক কলহ নাকি অন্য কোনো গভীর ষড়যন্ত্র, তা তদন্ত সাপেক্ষ।
এই নৃশংস ঘটনা কলকাতার মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বারাসাত থেকে কুমারটুলি পর্যন্ত পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এখন দেখার, তদন্তে নতুন কী তথ্য উঠে আসে!